ঢাকা,বুধবার, ১ মে ২০২৪

মাতামুহুরী নদীতে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের ৫মেধাবী ছাত্রের সলিল সমাধি, ৩জনের লাশ উদ্ধার: ২জন নিখোঁজ

জহিরুল ইসলাম, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পৌর সদরের ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত চকরিয়া গ্রামার স্কুলের ৫মেধাবী ছাত্রের সলিল সমাধি হয়েছে মাতামুহুরী নদীতে। গতকাল শনিবার দুপুরে তারা মাতামুহুরী ব্রীজের সামান্য দক্ষিণ পাশে সদ্য জেগে উঠা বালু চরে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলে শেষে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মাতামুহুরী নদীতে গোসল করতে নামে একদল ক্ষুদে ফটবলার। তৎমধ্যে ৬জন ছাত্র নিখোঁজ হয়ে যায়। একজনকে তাদের সহপাঠিরা মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার ৩ঘন্টা পর স্থানীয় জনগন ও ডুবুরি দল নদীতে জাল ফেলে নিখোঁজ হওয়া ৫ছাত্রের মধ্যে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ২সহোদর আমিনুল হোছাইন এরশাদ (১৬) ও তার ছোট ভাই একই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মেহরাব হোসেন তারা চকরিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ষ্টেশন পাড়ার আনোয়ার হোসেনের পুত্র, একই স্কুলের শিক্ষিকা জলি ম্যাডামের পুত্র দশম শ্রেণীর চাত্র তুর্ণ ভট্রাচার্য (১৬)। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ফরহাদ বিন শওকত (১৬) পিতা: শওকত ও গ্রামার স্কুলে

র অধ্যক্ষের পুত্র সাজ্জাত জওয়াদের লাশ এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। চকরিয়া ও কক্সবাজারের

ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল লাশ উদ্ধারে তৎপরতা এখনো অব্যহত রেখেছে।
চকরিয়া মাতামুহুরী ব্রিজ সংলগ্ন মাতামুহুরী নদীর চরে ফুটবল খেলে নদীতে গোসল করতে গিয়ে ৫ ছাত্রের সলিল সমাধি ঘটেছে। এ ঘটনার পর কয়েক হাজার শোকার্ত নর-নারী নদীর দুপাড়ে অবস্থান করছে। এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার দুপুর ২ টার সময়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়ার পৌরসদর এলাকার চকরিয়া গ্রামার স্কুলের দশম শ্রেণির ৭/৮ জন ছাত্রসহ ২০/২২ জনের একদল ক্ষুদে ফুটবলার বিভিন্ন স্কুলের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে মাতামুহুরী নদীর ব্রিজ সংলগ্ন চরে ফুটবল খেলতে যায়। খেলা শেষে ওইসব ফুটবল দলের সদস্যরা মাতামুহুরী নদীতে গোসল করতে নামে। ওই সময়ে ক্ষুদে ফুটবলাররা গোসল শেরে উঠে আসলেও ৬ জন ছাত্র নদীতে গোসল করতে নামে আর কুলে ফিরে আসেনি। এ সময় সবক’জন ছাত্র নদীতে তলিয়ে যেতে দেখে জামি নামের একজন ছাত্র কোন রকমে সাঁতার কেটে উঠতে পারলেও এমশাদ, মেহেরাব, তুর্ণ, অর্ভি ও ফরহান নদী থেকে উঠতে পারেনি। প্রি-ক্যাডেট গ্রামার স্কুলের ১ জন শিক্ষক জানিয়েছেন, শনিবার সকালে নদীতে তলিয়ে যাওয়া ছাত্ররা উচ্চতর গণিত পরীক্ষা শেষ করে বেরিয়ে যায়। পরে তারা মাতামুহুরী নদীর চরে ফুটবল খেলে গোসল করতে নেমে এ মর্মান্ত্বিক ঘটনার শিকার হয়েছে। নদীতে তলিয়ে যাওয়া এমশাদ ও মেহেরাব চকরিয়া আনোয়ার শপিং কমপে¬ক্সের মালিক আনোয়ার হোছাইনের ছেলে। তুর্ণ ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জলির পুত্র বলে জানা গেছে। এছাড়া ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের পুত্র অর্ভিও রয়েছে। ফরহানের ঠিকানা জানা যায়নি। চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসে কোন ডুবুরি না থাকায় উদ্ধার অভিযান চলছে না বলেই চলে। তবে স্থানীয় লোকজন পানিতে তলিয়ে যাওয়া ৫ ছাত্র উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মাতামুহুরীর চর জুড়ে এ ঘটনার পর থেকে হৃদয় বিদারক ঘটনার অবতারণা ঘটেছে। এ ঘটনা শুনার পর কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মৌলভী ইলিয়াছ এমপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম, চকরিয়া নিউজ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো কক্সবাজার জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন হারানো অভিভাবক, স্কুরের ছাত্র-ছাত্রীদের কন্নায় আকাশ ভারী উঠেছে।

পাঠকের মতামত: